ফাতিমা বিনতে আসওয়াদ

মা ফাতিমা বিনতে আসওয়াদ রাসুলের(সাঃ) প্রতি প্রথম ঈমান আনয়নকারীদের অন্যতম ছিলেন তিনি। নবীজীর নবুওয়ের আগে তিনি মুসলমানদের জাতির পিতা হযরত ইবরাহীমের(আঃ) দ্বীনের অনুসারী ছিলেন।তিনি ছিলেন একজন পুতঃপবিত্র নারী।
ফাতিমা পূর্ণ গর্ভাবস্থায় যখন একদিন কাবা তাওয়াফ করছিলেন, তখন তিনি হঠাৎ প্রবল প্রসব বেদনা অনুভব করেন। তাড়াতাড়ি ঘরের দিকে রওনা করতে চাইলে প্রসব বেদনা এতই প্রখর ছিল যে সম্বভ হচ্ছে না।কাবার দেয়ালের নিকট গিয়ে বলেন,...

“প্রভু হে! আমি তোমার প্রতি, তোমার পক্ষ হতে যে সব কিতাব নাজিল হয়েছে তার প্রতি এবং এ ঘরের নির্মাতা ইবারহীমের (আঃ) কথার প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান পোষণ করি। হে এলাহী! এ ঘরের নির্মাতার সম্মানে এবং আমার পেটে যে শিশু আছে তার উছিলায় এ শিশুর জন্মদান সহজ করে দাও”।
কাবা ঘরের ফাটল সৃষ্টি হয়,
তখন পেছন থেকে আওয়াজ আসে “এদিকে আসুন” তাই তিনি ফিরে তাকিয়ে দেখেন খানা কাবার রুকন ইয়ামেনীর দিকে দেয়ালে একটি ফাক হয়ে গেছে মহান আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে । তিনি সে ফাঁক দিয়েই ভেতরে প্রবেশ করলেন। প্রবেশ করা মাত্র সেটা আবার বন্ধ হয়ে যায়। তিন দিন খানা কাবার ভেতরে অবস্থান করলেন। তিন দিন পর আবার সে দেয়াল ফাঁক হয়ে গেলে তিনি শিশু সহ বাইরে বেড়িয়ে আসেন। পথে নবীর সঙ্গে দেখা হয়। তিনি (নবী) চাচীকে সালাম করেন এবং শিশুর জন্মের জন্য খােশ আমবেদ জানান। প্রতি উত্তরে চাচি বললেন এটা কি ধরনের বাচ্চা আজ তিন দিন চোখ মেলেও চায়নি এবং কোন আহারও গ্রহণ করেনি। তখন নবী বললেন বাচ্চাকে আমার কোলে দিন। নবীর কোলে আসা মাত্রই শিশু চোখ খােলে নবীর দিকে চাইলেন এবং সালাম দিলেন, “আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ” নবী সালামের উত্তর দিলেন, সালাম বিনিময়ের পর রাসূলুলার জিব মুখে দেয়া মাত্র তিনি চুষে খেলেন। তারপর নবী বললেন, কিছু শুনাও। শিশু বললেন, কোথা থেকে শুনাবাে। নবী বললেন তােমার যেখান থেকে ইচ্ছে। হযরত আলী সূরা মােমেনীন পড়ে শুনালেন।এ যেন নবুয়াতের সংস্পর্শে ইমামত ধন্য হল।

হযরত আলীর (আ:)জন্ম নেয়ার স্থান হওয়ার মাধ্যমে আসলে পবিত্র কাবাই সম্মানিত হয়েছে। মারইয়াম (আ.)-এর গর্ভাবস্থায় মহান আল্লাহ তাঁর প্রতিপালনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, কিন্তু যখন সন্তান প্রসবের সময় হলো তখন আল্লাহ তাঁকে আল্লাহর ঘর থেকে বাইরে যাবার জন্য নির্দেশ দিলেন। অথচ তিনি ছিলেন একজন নবীকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন। কিন্তু মাওলা আলীর জন্মের সময় কাবা ঘরের দেয়ালে ফাঁক সৃষ্টি করে আল্লাহ তায়ালা হযরত আলীর মা হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদকে কাবায় প্রবেশ করার সুযোগ তৈরি করে দিলেন। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের চিন্তা করার প্রয়োজন রয়েছে। হযরত আলী (আ.)-এর মা তাঁর অসহায় অবস্থায় মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলেন। আর আল্লাহ তাআলা তাঁকে সাহায্য করলেন। তিনি তাঁকে নিজ ঘরের মেহমান করলেন। আল্লাহ চাইলে তাঁকে দরজা দিয়েই নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সারা বিশ্বের বুকে দৃষ্টান্ত রাখার জন্য তাঁকে কাবা ঘরের দেয়ালে ফাটল সৃষ্টি করার মাধ্যমে তাঁকে বরণ করলেন।
মূসা (আ.)-এর মা এবং ঈসা (আ.)-এর মাকেও আল্লাহ হেফাজত করেছেন, পথ প্রদর্শন করেছেন এবং তাঁদেরকে প্রতিপালন করেছেন। অবশেষে তাঁদের সন্তানরা নবী-রাসূল হয়েছেন। আর আমরা দেখতে পাচ্ছি হযরত আলীর (আ.)-মাকেও আল্লাহ প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করছেন। নিশ্চয়ই এর মধ্যে আমাদের জন্য ভাববার বিষয় রয়েছে।

শত শত বছর ধরে সরকার,কাবা গৃহের দেয়ালের ফাটল মেরামত করার চেষ্টা চালিয়েছে কিন্তু তাদের সকল প্রচেষ্ঠাই ব্যর্থ হয়েছে। ড. তারিক আল কাতীব তিনি সরকারী ভাবে নিয়োজিত মেরামত কমিটির সদস্য। তিনি বলেন:-যত উত্তম ভাবেই এ ফাটলের মেরামতের কাজ করা হয়েছে,তাতে কোন কাজ হয়নি। প্রতি বছর রজব মাসের ১৩ তারিখে আবার নতুন করে এ দেয়ালের ফাটল সৃষ্টি হয়। আমরা জানি রজব মাসের ১৩ তারিখে ইমাম মাওলা শেরে আলী আঃ ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন।

📩 এখনও সেই ফাটল বা চিহ্ন বিদ্যমান একটি ছবি এই পোস্ট এর সাথে দেয়া হলো, ছবি টি দেখুন ।
- সুবহান আল্লাহ -
কাবার দেয়াল
কাবার দেয়াল



Subscribe Our Youtube Channel

Disqus Comments