প্রশ্ন ০১- মাতম করা, ক্রন্দন করা, মার্সিয়া ও নাওহা পড়া এবং শোক পালন করা ইসলামে কিম্বা শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে জায়েজ আছে কিনা ?
'মহররম' এই মাসের সম্মান মর্যাদা সম্পর্কে আপনাদের কম-বেশি সকলেরই জানা আছে। তবুও এ প্রসঙ্গে কিছু বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করব ইনশাহআল্লাহ্। 'মহররম' আরবী হিজরি সনের প্রথম মাস ও একটি মহা শোকের মাস। সন ৬১ হিজরির ১০ই মহররম কারবালার মরু প্রান্তরে নবী বংশের উপর মুয়াবিয়ার ছেলে ইয়াজিদ এর বাহিনী যে অন্যায় অত্যাচার চালায় এবং নবী (সাঃ) এর নাতি জান্নাতের যুবকদের সরদার ইমাম হুসায়েন (আঃ) কে নির্মমভাবে হত্যা করে তা কোন মুসলমানের ভুলার কথা নয়। যার মনের মধে নবীর (সাঃ) প্রতি ও তার পরিবারের এই সন্তানের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে সে ইমাম হুসায়েন (আঃ) এর এই নৃশংস হত্যাকান্ডে ক্রন্দন করবে, মাতম জারী করবে ও শোক পালন করবে, এতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) স্বয়ং এই মাসে শোক পালন করেছেন। নবী (সাঃ)-এর শোক আমার শোক। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, কিছু সংখ্যক মুসলমান এই শোক পালন করাকে বিদাত বা শরীয়ত পরিপন্থি কাজ বলে ফতোয়া দেন, শিয়ারা মাতম করে কেন ?
উত্তর ০১ঃ আল্লাহ পবিত্র কোরআন শরীফে সূরা ইউসুফের ৮৪নং আয়াতে এরশাদ করছেনঃ
"ইয়াকুব আঃ তাদের হতে (সন্তানদের হতে) বিমুখ হলেন এবং বললেন, "হায় দুঃখ ইউসুফের জন্য।" শোকে তার দু'চোখ অন্ধ হয়ে গিয়েছিলো, তিনি ছিলেন অত্যান্ত শোকাভিভূত।
উত্তর ০২ঃ কোরআন শরীফের ২৬ পারার শেষ রুকুর আয়াতে এরশাদ হচ্ছে, "ইব্রাহিমের স্ত্রী চিৎকার করতে করতে আর মুখমণ্ডলে আঘাত করতে করতে এলো......।"
(সূত্রঃ আল যারিয়াত, আয়াত নং-২৯)।
উত্তর ০৩ঃ রাসুল (সাঃ)-এর ওফাতে উম্মুল মোমেনিন হযরত আয়েশা (রাঃ) ও অন্যান্য সাহাবাদের পরিবার বর্গের মেয়েরা মাতম করে, মাথা ও বুক পিটিয়ে শোক পালন করে।
(সূত্রঃ মুসনাদে ইমাম ইবনে হাম্বল, খন্ড-০৬, পৃষ্ঠাঃ ২৭৮)।
উত্তর ০৪ঃ হযরত আদম (আঃ) নিজ প্রথম সন্তান এবং শহীদের (হাবিল) এর জন্য ক্রন্দন করেছেন। মারসিয়া পড়েছেন এবং হাঁসি বর্জন করেছেন।
(সূত্রঃ তাফসিরে খাজেন, পৃষ্ঠাঃ ৪৫, মোয়াল্লেম, কবির এবং রাওজাতুল আহবাব ১ম খন্ড, পৃষ্ঠাঃ ১৬)।
উত্তর ০৫ঃ হযরত রাসুল (সাঃ) হযরত আমীর হামজার শাহাদাত এবং মৃত দেহ দেখে উচ্চ স্বরে চিৎকার করে ক্রন্দন করেছেন।
(সূত্রঃ মাদারেজুন নবুওাত ও ইবনে খালেদুন ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠাঃ ১০৮, কাঞ্জুল উম্মাল, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠাঃ ২১)।
উত্তর ০৬ঃ আল্লাহ্ তায়ালা কোরআনপাকে বলেছেনঃ "ফাকাবেলতু ইমরাতাহু ফি ছারতেন ফাসাক্কাত ওয়াকহেনা ওয়া ফালতি আজুজা আজিম" (সূরা যরিয়াত, আয়াত ২৯)।
বিষয় প্রসঙ্গটি হচ্ছে, ইসহাকের আঃ জন্মের শুভ সংবাদ শুনে ইব্রাহীম (আঃ) এর বিবি সায়রা আগে এসে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং (খুশীতে) নিজের মুখ পিটলেন। অর্থাৎ মুখে হাত দিয়ে চাপড়ালেন এবং বলতে লাগলেন প্রথমত, আমি বৃদ্ধা, দ্বিতীয়ত, এ অবস্থায় আমার বাচ্চা হয়েছে। তাফসিরে হোসেনীতে ছাকাত এর অর্থ মুখ হাত দিয়ে চাপড়ানো লিখা আছে। অর্থাৎ মুখে থাপ্পর মারা। যখন খুশীতে মুখ পিটানোর কথা কোরআন সাক্ষী দেয় তাহলে ইসলাম রক্ষাকারী ইমাম হোসেনের (আঃ) শোকে মাতম জায়েজ হবেনা কেন?
যেভাবে আমরা নিজের কোন নিকটাত্মীয় মারা গেলে বুক ও মাথা চাপরাই বলি হায় আমার বাবা, হায় আমার মা কিংবা হায় আমার সন্তান।
“বলুন, আমি আমার রিসালাতের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কিছুই চাই না আমার নিকট আত্মীয়দের(আহলে বাইত) ভালবাসা ছাড়া” (শুরা-২৩)।
কোরআনে আল্লাহ তার রাসুলকে শিখিয়ে দিচ্ছেন আপনার অনুসারীদের বলুন রিসালাতের বিনিময়ে নিকট আত্মীয়দের প্রতি ভালবাসা চাই।
‘নবী, মুমিনদের কাছে তাদের নিজদের চেয়ে ঘনিষ্ঠতর’ (সূরা আল আহযাব ৬)
নিজের জীবনের চাইতেও বেশি ভালোবাসতে হবে নবী সাঃ কে, আর নবী সাঃ রিসালাতের বিনিময়ে তার আত্মীয়দের ভালোবাসতে বলেছেন।
---------------------------------------
‘নবী, মুমিনদের কাছে তাদের নিজেদের চেয়ে ঘনিষ্ঠতর’
(সূরা আল আহযাব ৬)
অর্থাৎ নিজের জীবনের চেয়ে নবী সাঃ কে ভালবাসতে হবে।
“বলুন, আমি আমার রিসালাতের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কিছুই চাই না আমার নিকট আত্মীয়দের(আহলে বাইত) ভালবাসা ছাড়া”
(শুরা-২৩)।
অর্থাৎ রাসুল সাঃ এর সাথে সাথে তার আত্মীয়দেরও ভালবাসতে হবে।
'মহররম' এই মাসের সম্মান মর্যাদা সম্পর্কে আপনাদের কম-বেশি সকলেরই জানা আছে। তবুও এ প্রসঙ্গে কিছু বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করব ইনশাহআল্লাহ্। 'মহররম' আরবী হিজরি সনের প্রথম মাস ও একটি মহা শোকের মাস। সন ৬১ হিজরির ১০ই মহররম কারবালার মরু প্রান্তরে নবী বংশের উপর মুয়াবিয়ার ছেলে ইয়াজিদ এর বাহিনী যে অন্যায় অত্যাচার চালায় এবং নবী (সাঃ) এর নাতি জান্নাতের যুবকদের সরদার ইমাম হুসায়েন (আঃ) কে নির্মমভাবে হত্যা করে তা কোন মুসলমানের ভুলার কথা নয়। যার মনের মধে নবীর (সাঃ) প্রতি ও তার পরিবারের এই সন্তানের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে সে ইমাম হুসায়েন (আঃ) এর এই নৃশংস হত্যাকান্ডে ক্রন্দন করবে, মাতম জারী করবে ও শোক পালন করবে, এতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) স্বয়ং এই মাসে শোক পালন করেছেন। নবী (সাঃ)-এর শোক আমার শোক। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, কিছু সংখ্যক মুসলমান এই শোক পালন করাকে বিদাত বা শরীয়ত পরিপন্থি কাজ বলে ফতোয়া দেন, শিয়ারা মাতম করে কেন ?
উত্তর ০১ঃ আল্লাহ পবিত্র কোরআন শরীফে সূরা ইউসুফের ৮৪নং আয়াতে এরশাদ করছেনঃ
"ইয়াকুব আঃ তাদের হতে (সন্তানদের হতে) বিমুখ হলেন এবং বললেন, "হায় দুঃখ ইউসুফের জন্য।" শোকে তার দু'চোখ অন্ধ হয়ে গিয়েছিলো, তিনি ছিলেন অত্যান্ত শোকাভিভূত।
উত্তর ০২ঃ কোরআন শরীফের ২৬ পারার শেষ রুকুর আয়াতে এরশাদ হচ্ছে, "ইব্রাহিমের স্ত্রী চিৎকার করতে করতে আর মুখমণ্ডলে আঘাত করতে করতে এলো......।"
(সূত্রঃ আল যারিয়াত, আয়াত নং-২৯)।
উত্তর ০৩ঃ রাসুল (সাঃ)-এর ওফাতে উম্মুল মোমেনিন হযরত আয়েশা (রাঃ) ও অন্যান্য সাহাবাদের পরিবার বর্গের মেয়েরা মাতম করে, মাথা ও বুক পিটিয়ে শোক পালন করে।
(সূত্রঃ মুসনাদে ইমাম ইবনে হাম্বল, খন্ড-০৬, পৃষ্ঠাঃ ২৭৮)।
উত্তর ০৪ঃ হযরত আদম (আঃ) নিজ প্রথম সন্তান এবং শহীদের (হাবিল) এর জন্য ক্রন্দন করেছেন। মারসিয়া পড়েছেন এবং হাঁসি বর্জন করেছেন।
(সূত্রঃ তাফসিরে খাজেন, পৃষ্ঠাঃ ৪৫, মোয়াল্লেম, কবির এবং রাওজাতুল আহবাব ১ম খন্ড, পৃষ্ঠাঃ ১৬)।
উত্তর ০৫ঃ হযরত রাসুল (সাঃ) হযরত আমীর হামজার শাহাদাত এবং মৃত দেহ দেখে উচ্চ স্বরে চিৎকার করে ক্রন্দন করেছেন।
(সূত্রঃ মাদারেজুন নবুওাত ও ইবনে খালেদুন ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠাঃ ১০৮, কাঞ্জুল উম্মাল, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠাঃ ২১)।
উত্তর ০৬ঃ আল্লাহ্ তায়ালা কোরআনপাকে বলেছেনঃ "ফাকাবেলতু ইমরাতাহু ফি ছারতেন ফাসাক্কাত ওয়াকহেনা ওয়া ফালতি আজুজা আজিম" (সূরা যরিয়াত, আয়াত ২৯)।
বিষয় প্রসঙ্গটি হচ্ছে, ইসহাকের আঃ জন্মের শুভ সংবাদ শুনে ইব্রাহীম (আঃ) এর বিবি সায়রা আগে এসে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং (খুশীতে) নিজের মুখ পিটলেন। অর্থাৎ মুখে হাত দিয়ে চাপড়ালেন এবং বলতে লাগলেন প্রথমত, আমি বৃদ্ধা, দ্বিতীয়ত, এ অবস্থায় আমার বাচ্চা হয়েছে। তাফসিরে হোসেনীতে ছাকাত এর অর্থ মুখ হাত দিয়ে চাপড়ানো লিখা আছে। অর্থাৎ মুখে থাপ্পর মারা। যখন খুশীতে মুখ পিটানোর কথা কোরআন সাক্ষী দেয় তাহলে ইসলাম রক্ষাকারী ইমাম হোসেনের (আঃ) শোকে মাতম জায়েজ হবেনা কেন?
যেভাবে আমরা নিজের কোন নিকটাত্মীয় মারা গেলে বুক ও মাথা চাপরাই বলি হায় আমার বাবা, হায় আমার মা কিংবা হায় আমার সন্তান।
“বলুন, আমি আমার রিসালাতের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কিছুই চাই না আমার নিকট আত্মীয়দের(আহলে বাইত) ভালবাসা ছাড়া” (শুরা-২৩)।
কোরআনে আল্লাহ তার রাসুলকে শিখিয়ে দিচ্ছেন আপনার অনুসারীদের বলুন রিসালাতের বিনিময়ে নিকট আত্মীয়দের প্রতি ভালবাসা চাই।
‘নবী, মুমিনদের কাছে তাদের নিজদের চেয়ে ঘনিষ্ঠতর’ (সূরা আল আহযাব ৬)
নিজের জীবনের চাইতেও বেশি ভালোবাসতে হবে নবী সাঃ কে, আর নবী সাঃ রিসালাতের বিনিময়ে তার আত্মীয়দের ভালোবাসতে বলেছেন।
---------------------------------------
‘নবী, মুমিনদের কাছে তাদের নিজেদের চেয়ে ঘনিষ্ঠতর’
(সূরা আল আহযাব ৬)
অর্থাৎ নিজের জীবনের চেয়ে নবী সাঃ কে ভালবাসতে হবে।
“বলুন, আমি আমার রিসালাতের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কিছুই চাই না আমার নিকট আত্মীয়দের(আহলে বাইত) ভালবাসা ছাড়া”
(শুরা-২৩)।
অর্থাৎ রাসুল সাঃ এর সাথে সাথে তার আত্মীয়দেরও ভালবাসতে হবে।
এখন মুসলিম ভাইদের কাছে প্রশ্ন হচ্ছে, যেভাবে আমরা নিজের কোন নিকটাত্মীয়
মারা গেলে বুক ও মাথা চাপরাই বলি হায় আমার বাবা, হায় আমার মা কিংবা হায়
আমার সন্তান। তাহলে রাসুল সাঃ এর কলিজার টুকরা ইমাম হোসাইন আঃ এর জন্য
কান্না ও বুক চাপরালে দোষ কিসের ?
আচ্ছা ঠিক আছে ধরে নিচ্ছি আপনি আপনার নিকটাত্মীয় মারা গেলে আপনি বুক চাপরান না এবং কোন প্রকার কান্নাকাটিও করেন না, আপনারা তো আবার ফতোয়া দিয়ে দেন মৃত ব্যাক্তির জন্য শোক করা যাবেনা।
এখন লক্ষ করুন, জ্বি ভাই আপনাকেই বলছি খেয়াল করুনঃ-
ইউসুফ আঃ হারিয়ে যাওয়ার শোকে ইয়াকুব আঃ কাদতে কাদতে নিজের চোখ এর জ্যোতি হারিয়ে অন্ধ হয়ে যান।
(সুত্রঃ সুরা ইউসুফ ৮৪)।
রাসুল (সাঃ) হযরত আমীর হামজার শাহাদাত এবং মৃত দেহ দেখে উচ্চ স্বরে চিৎকার করে ক্রন্দন করেছেন।
(সূত্রঃ কাঞ্জুল উম্মাল, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠাঃ ২১)।
ভাই আসুন নিজে নবী সাঃ এর সুন্নত পালন করি এবং অন্যকে উৎসাহিত করি।
(আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ)
আচ্ছা ঠিক আছে ধরে নিচ্ছি আপনি আপনার নিকটাত্মীয় মারা গেলে আপনি বুক চাপরান না এবং কোন প্রকার কান্নাকাটিও করেন না, আপনারা তো আবার ফতোয়া দিয়ে দেন মৃত ব্যাক্তির জন্য শোক করা যাবেনা।
এখন লক্ষ করুন, জ্বি ভাই আপনাকেই বলছি খেয়াল করুনঃ-
ইউসুফ আঃ হারিয়ে যাওয়ার শোকে ইয়াকুব আঃ কাদতে কাদতে নিজের চোখ এর জ্যোতি হারিয়ে অন্ধ হয়ে যান।
(সুত্রঃ সুরা ইউসুফ ৮৪)।
রাসুল (সাঃ) হযরত আমীর হামজার শাহাদাত এবং মৃত দেহ দেখে উচ্চ স্বরে চিৎকার করে ক্রন্দন করেছেন।
(সূত্রঃ কাঞ্জুল উম্মাল, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠাঃ ২১)।
ভাই আসুন নিজে নবী সাঃ এর সুন্নত পালন করি এবং অন্যকে উৎসাহিত করি।
(আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ)
Subscribe Our Youtube Channel